খাসিয়াদের বাধায় সামাজিক বনায়নের চারা রোপন করতে পারেনি বনবিভাগ
জাহিদুল ইসলাম ফেরদাউস।
জেলা প্রতিনিধি (মৌলভীবাজার)
কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মুরইছড়া বনবিট এলাকায় সামাজিক বনায়নের চারা রোপনে ফের বাধা দিয়েছে খাসিয়ারা। গত ৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এক সম্প্রীতি সমাবেশের প্রধান অতিথি মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান খাসিয়া-বনবিভাগ ও স্থানীয় উপকারভোগীদের মধ্যে সৃষ্ঠ জটিলতা নিরসন করে দিলেও বিষয়টি এখন মানছেন না খাসিয়া জনগোষ্ঠি এমন দাবি বনবিভাগের। ফলে ফের বনায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় কাঁঠালতলী বাজারে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কমিউনিটি সেন্টারে সাম্প্রতিককালে খাসিয়া সম্প্রদায় ও বনবিভাগ-উপকারভোগীদের মধ্যে বনভূমিতে চারা রোপণ নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে গত ৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এক সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান ও বিশেষ অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়াসহ জেলা ও উপজেলার উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও খাসি সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ।
সভায় উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন, বনবিভাগ, জনপ্রতিনিধি, উপকারভোগী ও খাসি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিসহ ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এরই আলোকে বনবিভাগের ২০২০-২১ অর্থ বছরের বরাদ্দের বনায়নের চারা রোপণের কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য গত সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কমিটির সভাপতি কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ইউএনও কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাউসার দস্তগীর, কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষন রায়, কর্মধা ইউপির চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক, বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন, মুরইছড়া বিট কর্মকর্তা অর্জুন কান্তি দস্তিদার, সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী জাহাঙ্গীর আলম ও খাসি সম্প্রদায়ের নেত্রী বাবলি তালাং। সভায় পরদিন মঙ্গলবার থেকে বনবিভাগকে উক্ত বনভূমিতে চারা রোপণের কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়।
মুরইছড়া বিট কর্মকর্তা অর্জুন কান্তি দস্তিদার জানান, সভার সিদ্ধান্তনুযায়ী মঙ্গলবার চারা রোপণের ৬০ জন শ্রমিকসহ বনভূমিতে উপস্থিত হলে খাসি সম্প্রদায়ের মন্ত্রী লবিং সুমের, মন্ত্রী-২ হেনরি তালাংসহ আরও খাসিয়ারা তাদের চারা রোপণে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তিনি অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং কুলাউড়া থানার ওসিসহ বনবিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে চারা রোপণ না করে শ্রমিক নিয়ে ফিরে যান।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, উক্ত বিষয়টি তিনি অবহিত হয়েছেন। আগামী মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) তিনিসহ কমিটির সকল সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিন দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
Leave a Reply