ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ও বিশিষ্ট সাংবাদিক মুঃ মনিরুজ্জামান মুনিরকে একটি চাঁদাবাজি মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। ৪ অক্টোবর ঝালকাঠির বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মোঃ খায়রুল ইসলাম রায়ে তাকে খালাসের আদেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিক মুঃ মনিরুজ্জামান মুনিরের বিরুদ্ধে নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের জুরকাঠী গ্রামের মৃত আফতার হাওলাদারের পুত্র মোঃ সবুজ হাওলাদার চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে ঝালকাঠি আদালতে গত ৩০/০৮/২০১৭ তারিখে এক নালিশী অভিযোগ এমপি-১১৭/২০১৭ দায়ের করেন। আদালত নলছিটি থানাকে এজাহার দায়ের পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। এতে নলছিটি থানায় একটি মামলা রেকর্ড হয়। মামলা নং-২২ তারিখ-৩০/১০/২০১৭।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৮/০৬/২০১৭ তারিখে জুরকাঠী শিমুলতলা এলাকার জনৈক কাঞ্চন আলী পাটক্ষেতে একটি ছাগলকে বলাৎকার করাকালীন সবুজসহ আরো ৩/৪ জন মোবাইলে ধারণ করে এবং কাঞ্চন আলীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে। এরপরও ধারণকৃত ভিডিও’র ভয় দেখিয়ে ওই কাঞ্চন আলীর নিকট আরো টাকা দাবী করা হয়। বিষয়টি সাংবাদিক মুঃ মনিরুজ্জামান মুনির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরলে তা ভাইরাল হয়।এতে নলছিটি থানার পুলিশ ওই কাঞ্চন আলীকে আটক করে মামলা দিয়ে কোর্টে চালান দেয়। পরবর্তীতে নলছিটি থানার এসআই ফিরোজ আহম্মেদ সবুজ হাওলাদারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে এবং তাকে মামলায় চালান দেয়ার ভয় দেখিয়ে বলে যদি সাংবাদিক মুঃ মনিরুজ্জামান মুনিরের বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করো তাহলে তোকে ছেড়ে দিবো। পুলিশের ভয় ও চাপের মুখে সবুজ হাওলাদার নলছিটি থানার তৎকালীন এসআই ফিরোজ আহম্মেদের সাজানো অভিযোগে আদালতে নালিশী মামলা দায়ের করে। গত ১২ সেপ্টেম্বর-২১ তারিখে স্বাক্ষী দিতে এসে ঝালকাঠি জেলার বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারকের সামনে সবুজ হাওলাদার ওই তথ্য প্রকাশ করেন। এরপর আদালত স্বাক্ষী নেয়া ক্লোজড করে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি পদক্ষেপ নেয়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সনে নলছিটি থানার ওসি কর্তৃক জাতীয় গণহত্যা দিবসে একটি বিদ্যালয়ের বার্ষিক বনভোজনে অংশ নিয়ে আনন্দ,নাচ,গান ও রাফেল ড্র, নলছিটি থানার ওসি কর্তৃক ৩ শিশুকে পিটিয়ে আহত, গাজাঁসহ আটক যুবক হ্যান্ডক্যাপসহ পলায়ন, পুলিশের ঘুষ-দুর্ণীতিতে থানা ঘেরাওসহ কয়েকজন এসআই ও এএসআইয়ের ঘুষ- দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় নলছিটি ও ঝালকাঠি জেলা পুলিশ বিভাগ সাংবাদিক মুঃ মনিরুজ্জামান মুনিরের উপর ক্ষিপ্ত হয়। যার প্রেক্ষিতে পুলিশের ইন্ধনে সাংবাদিক মুনিরের বিরুদ্ধে ৩টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করা হয়। অপর চাঁদাবাজি মামলা দু’টোও বিচারাধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিক মুঃ মনিরুজ্জামান মুনির বলেন, নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশে তার বিরুদ্ধে পুলিশের ইন্ধনে ৩টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করে হয়রানি করা হয়। মিথ্যা মামলায় তাকে পুলিশের হয়রানির ভয়ে পালিয়ে ও পরবর্তীতে আটক হয়ে হাজতবাস করতে হয়েছে। এতে তার স্ত্রী, ছোট দু’টো মেধাবী ছেলে-মেয়ের মানসিক হয়রানি হতে হয়েছে। এক একটি মামলা ৪/৫ বছর যাবত পরিচালনা করতে গিয়ে হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এর দায় কে নেবে প্রশ্ন রেখে সাংবাদিক মুনির বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারাও মিথ্যা এজাহারের অনুরূপ চার্জশীট দাখিল করে। কিন্তু আদালতে বাদী ও স্বাক্ষীরা আসামীকে চেনে না, ঘটনার তারিখ, ঘটনাস্থল ও ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেনা বলে জানায়। সাংবাদিক মুনির আরো বলেন, সরকারের কাছে আবেদন মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার সাথে সাথে মামলার আসামিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবী জানাচ্ছি।।
Leave a Reply